ঢাকা,বুধবার, ৮ মে ২০২৪

খুটাখালী থেকে অপহৃত জসিম ফিরেছে, আনসার কমান্ডার গিয়াসের খোঁজ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
অপহরণের এক সপ্তাহ পর উদ্বেগ ও আতংকের ডেরা থেকে অপহৃত যুবক জসিম উদ্দিনের মুক্তি মিললেও এখনো হদিস নেই অপহৃত আনসার কমান্ডার গিয়াস উদ্দিনের (২৮)। গত ১৫ জুলাই দুপুর ১টায় চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের প্রধান সড়কস্থ মেধা কচ্ছাপিয়া যাত্রী ছাউনীর উত্তর পাশ থেকে মোটর সাইকেল আরোহী দু’যুবক গিয়াস ও জসিমকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের একদল লোক। এদিকে ছাড়া পাওয়া যুবক জসিম চকরিয়া থানা পুলিশ ও স্বজনদের জানান- আমরা দু’জনকে গাড়িতে তুলে নেয়ার পরই মুখে কালো কাপড়ের মাস্ক পরিয়ে দেয়। তুলে নেয়ার ২ ঘন্টার পর আমাদেরকে পৃথক করে ফেলে। আমাকে অন্ধকার ঘরে বিভিন্ন সময় কিছু খাবারও দেয় তারা। ২০ জুলাই গভীর রাত ২টায় রামুর উপজেলা চেইন্দা এলাকায় আমাকে একটি গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয় তারা। পরে আমি রাস্তার পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে বাড়িতে ফোন দিই। পরে রামু থানা পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে গতকাল ২১ জুলাই খুটাখালী থেকে আসা স্বজনদের হাতে তুলে দেয়। জসিম আরও জানান- অপহৃত আনসার কমান্ডার গিয়াসকে তারা কোথায় রেখেছে, তার ভাগ্যে কি ঘটেছে আমি কিছুই জানি না। ছাড়া পাওয়া আতংকিত জসিম কথা বলার সময় সারাক্ষণ ভয়ে আচ্ছন্ন ছিল।
এদিকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীর ১নং ওয়ার্ডের উত্তর মেধা কচ্ছপিয়া গ্রামের মোহাম্মদ হোছনের ছেলে আনসার কমান্ডার গিয়াস উদ্দিন (২৮) এবং একই এলাকার ছাবের আহমদের ছেলে জসিম উদ্দিন (২৩) গত ১৫ জুলাই অপহৃত হয়।
একইদিন গিয়াস উদ্দিনের পিতা মোহাম্মদ হোছন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। যার এসডিআর নং- ১৬৬৭/১৯। অভিযোগে জানা যায়, ঘটনার দিন দুপুর ১টার দিকে তার ছেলে আনসার কমান্ডার গিয়াস উদ্দিন ও ছাবের আহমদের ছেলে জসিম উদ্দিন একটি মোটরসাইকেল যোগে খুটাখালী বাজারে যাচ্ছিল। তারা মেধাকচ্ছপিয়া যাত্রী ছাউনি অতিক্রম করে উত্তরদিকে কিছুদূর যাওয়া মাত্রই বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অজ্ঞাত নাম্বারের জলপাই রংয়ের বক্সীগাড়ী মোটর সাইকেলের পথরোধ করে দাঁড়ায়। তাৎক্ষণিক গাড়ী থেকে ৩/৪ জন অজ্ঞাত লোক বের হয়ে মোটরসাইকেল আরোহী দুজনকে টানাহেঁচড়া করে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে ফেলে। এসময় কিছু বুঝে উঠার আগে গিয়াস উদ্দিন ও জসিম উদ্দিনকে জোরপূর্বক বক্সীগাড়ীতে তুলে নেয়। এসময় তাদের চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে আসলে বক্সীগাড়ী ও বক্সীগাড়ীতে করে আসা একজন মোটর সাইকেলটি নিয়ে দক্ষিণ দিকে দ্রুত চলে যায়।
এদিকে অপহৃতের পরিবার গত ১৬জুলাই কক্সবাজার র‍্যাব কার্যালয় ও ডিবি অফিসে অপহৃত দু’যুবকের খোঁজ নিয়েও কোনো কুলকিনারা করতে পারেনি। গিয়াস উদ্দিনের বাবা মোহাম্মদ হোছন জানান- আমার ছেলে গিয়াস দীর্ঘদিন ধরে আনসার কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে আসছে। আইনের লোক হয়ে কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না। নিখোঁজ আনসার কমান্ডার গিয়াসের শ্বশুর হাজী রেজাউল করিম বদন জানান, জামাই অপহরণের পর থেকে মেয়ে ও একমাত্র শিশু নাতির মুখের দিকে থাকাতে পারছি না। স্বামী এবং বাবার ফিরে আসার আশায় এখনোও বুক বেধে আছে আমার মেয়ে ও একমাত্র নাতি।

পাঠকের মতামত: